মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন
মরদেহের নমুনা ফরেনসিক ল্যাবে
আমার সুরমা ডটকম:
সুনামগঞ্জে এক কলেজ ছাত্রীর গর্ভে থাকা ছয়মাস বয়সী অপরিপক্ষ নবজাতকের লাশ উদ্ধার, ধর্ষণ ও পরবর্তীতে অবৈধ গর্ভপাত ঘটানোর মামলায় ইকবাল হোসেন (২২) নামে আলিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার
উদ্ধার কৃত লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
পরবর্তীতে নিহত নবজাতকের ডিএন এ পরীক্ষার জন্য তার মরদেহ থেকে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহকরে রোববার বিকেলেই সিলেট এমএমজি ওসামানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার যুবক জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট (উত্তর) ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামের বাসিন্দা ও পার্শ্ববর্তী জামে মসজিদেও মুয়াজ্জিম মো.আতাউর রহমানের ছেলে ও পার্শ্ববর্তী বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মেরুয়াখলার আলিম মাদ্রাসার ছাত্র।
এ ঘটনায় ভিকটিম কলেজছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃদ মাদ্রাসাছাত্র ইকবাল,তার বাবা-মাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।,
মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, অজ্ঞাত অর্থাৎ অপরিপক্ষ বয়সে অবৈধ গর্ভপাতে কিশোরীকে বাধ্যকরে তার গর্ভেথাকা নবজাতক হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
ভিকটিমের পরিবার, মামলা ও থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার বাদাঘাটের দিঘিরপাড় গ্রামের এইচএসসিতে সদ্য ভর্তি হওয়া ১৭ বছরের এক কলেজ ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একই গ্রামের মাওলানা আতাউর রহমানের বখাটে ছেলে ইকবাল গত এক বছর ধরে প্রেম ও অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। সম্পতি ওই কলেজ ছাত্রী ৬ মাসের অন্তস্বত্বা হয়ে গেলে ইকবাল ও তার পরিবাররের লোকজনকে গ্রামের মুরুব্বীরদের মাধ্যমে অবহিত করে বিয়ের জন্য চাপ দেযা হয়।
এদিকে বিয়ে পড়িয়ে পুত্রবধু হিসাবে ঘরে তুলে নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ইকবালের মা কলেজ ছাত্রীকে কৌশলে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে বুধবার বিকেলে পরিবারের লোকজন মিলে জোরপুর্বক অপরিপক্ষ গর্ভজাত শিশু সন্তান নষ্ট করতে কলেজ ছাত্রীকে গর্ভপাত ঘটনানোর ট্যাবলেট সেবন করিয়ে ফের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।,
শনিবার বিকেলে কলেজ ছাত্রীর প্রসব ব্যাথা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে ছয়মাস বয়সী মৃত এক শিশু সন্তান ভূমিষ্ট হয়। এরপর ইকবালের পরিবারের লোকজন নবজাতকের লাশ তরিগড়ি করে দাফনের জন্র গ্রামের একদল কুট-কৌশলীদের নিয়ে অপতৎপরতা শুরু করেন।
এ নিয়ে শনিবার সন্ধায় ভিকটিমের পিতা থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করলে পুলিশ রাতেই দিঘির পাড় গ্রাম থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার ও অভিযুক্ত ইকবালকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই হুমায়ুন কবির জানান, অভিযুক্ত অপর দুই আসামীকে দ্রুত গ্রেফতার ও অবৈধ গর্ভপাত ঘটানোর মাত্রাতিরিক্ত ট্যাবলেট সেবন করিয়েছে ওই কলেজ ছাত্রীকে তা কোন চিকিৎসকের পরামশে সেই চিকিৎসককেও আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।
রোববার সন্ধ্যায় তাহিরপুর থানার ওসি মোঃ আতিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর তাই আপাতত নিহত নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে ফরেনসিকল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
পরবর্তীতে ভিকটিম ও অভিযুক্ত ইকবাল দুজনকেই পুলিশী হেফাজতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিকল্যাবে পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।